শ্বসনের সংজ্ঞা:
- যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কোষস্থ খাদ্য জারিত হয়ে খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি গতীয় বা তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত ও মুক্ত হয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় তাকে শ্বসন বলে।
- শ্বসন এক ধরনের অপচিতি বিপাক।
- শ্বসন একটি তাপমোচী বা শক্তিমোচী প্রক্রিয়া।
শ্বসনের স্থান এবং সময়:
- প্রতিটি সজীব কোষে শ্বসন দিনরাত ঘটে।
- শ্বসনের প্রথম পর্যায় অর্থাৎ গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া কৌষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে এবং দ্বিতীয় পর্যায় অর্থাৎ ক্রেবস চক্র কোষের কোষ অঙ্গাণু মাইটোকন্ড্রিয়ায় ঘটে।
- শ্বসনের অধিকাংশ রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি মাইটোকন্ড্রিয়াতে ঘটায় মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলে।
- শ্বসনের সময় প্রচুর পরিমাণে ATP (38 অণু) উৎপন্ন হয়- যার মধ্যে শক্তি সঞ্চয় থাকে। ATP-র মধ্যে শক্তি সঞ্চিত থাকায় ATP-কে এনার্জি কারেন্সি বা শক্তির ভাণ্ডার বলে।
- শ্বসন স্থান →সজীব কোষ
- শ্বসনের সময় →দিবারাত্র
- শ্বসন অঙ্গাণু →মাইটোকন্ড্রিয়া
- শ্বসন বস্তু → প্রধানত গ্লুকোজ
- প্লাইকোলাইসিস →কোষের সাইটোপ্লাজম
- ক্রেবস চক্র → মাইটোকন্ড্রিয়া
- প্রধান শ্বাসরঞ্জক →হিমোগ্লোবিন ও হিমোসায়ানিন
শ্বসন দু'টি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। যথা- গ্লাইকোলাইসিস ও ক্রেবস চক্র।
গ্লাইকোলাইসিস:
- যে প্রক্রিয়ায় গ্লুকোসের সাইট্রোপ্লাজমে বিভিন্ন উৎসেচকের সহায়তায় আংশিক জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয় তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে।
সাহায্যকারী উৎসেচক: ADP, ATP, NADH ইত্যাদি
তাৎপর্য:
- (i) উৎপন্ন পাইরুভিক অ্যাসিড শ্বসনের পরবর্তী পর্যায়ে ক্রেবস চক্রের প্রধান উপাদানরূপে ব্যবহৃত হয়।
- (ii) নির্গত অল্প পরিমাণ তাপশক্তি অবাত শ্বসনকারী জীবের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস।
ক্রেবস চক্র:
- যে প্রক্রিয়ায় পাইরুভিক অ্যাসিড মাইটোকনড্রিয়ার মধ্যে O2 উপস্থিতিতে সম্পূর্ণ জারিত হয়ে শক্তি CO2 ও জল উৎপন্ন করে, তাকে ক্রেবস চক্র বলে।
সাহায্যকারী উৎসেচক: কো-এন-জাইম-এ, অ্যাকো-নাইটেজ, কার্বক্সাই-লেজ, ফিউ-ম্যারেজ ইত্যাদি।
তাৎপর্য:
- i) জীবের বিভিন্ন বিপাকীয় কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির প্রধান উৎস ক্রেবস চক্র।
- (ii) উৎপন্ন একাধিক জৈব অ্যাসিড অ্যামাইনো অ্যাসিড